[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

ভারী বৃষ্টিপাতে বিলাইছড়ি টু কারিগর পাড়া সড়কের কিছু অংশ ধ্বস।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা,
বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি- 

বিলাইছড়ি টু কারিগর পাড়া রাস্তাটি/ সড়কটি নির্মাণ করার ৮ মাসের মাথায় ধসে পড়েছে। ধসে পড়েছে বিলাইছড়ির নলছড়ি এলাকায় মনি মেম্বার বাড়ীর বিপরীতে। বিলাইছড়ি বাজার  পল্টন ঘাট হতে মাছকাবা ছড়া ৩,৮০০ মিটার যা প্রায় ৪ কি. মি. রাস্তা। তার মধ্যে মনি মেম্বার বাড়ির পাশে ২০ মিটারের মতো রাস্তা ওয়াল থাকার সত্ত্বেও সড়কটি নিমার্ণের ৮ মাসের মাথায় বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকবার সোল্ডার ভেঙ্গে ধসে পড়েছে বলে জানান পথচারী ও স্থানীয়রা। কার্পেটিং এর কাজও ভালো হয়নি এবং নির্মাণে অনেক গাফিলতি করা হয়েছে বলেও জানান তারা। এলজিডির তত্বাবধানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউটিমং নামে থাকলেও কাজটি বাস্তবায়ন করেছেন সাব-কন্ট্রাক্টর মো. নুরুজ্জামান। 

তারা জানান, ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য সিসির ফাঁকে পানি ঢুকে  দ্রুত ভেঙ্গে যাচ্ছে। তারা আরও জানান এখানে ওয়াল দেওয়া হলেও নীচে দেওয়া হয় নি মাটিকে শক্ত করে ধরে রাখার মতো ব্যবস্থা। শুধু কালো প্লাস্টিকের উপরে মাটির সাথে বালু এর পরে ঢালাই/কার্পেটিং করা হয়েছে। এতে মাটি ধাবালে/ চাপ পড়লে সিসি  ও সোল্ডারের উপরে অংশ ফাটল ধরে । বর্ষায় বৃষ্টিপাতে ফাঁটার ফাঁকে পানি ঢুকে ভেঙ্গে যাচ্ছে রাস্তাটি/ সড়কটি। তাছাড়া নীচে যে ওয়াল দেওয়া হয়েছে ওয়ালের ফাঁকে বৃষ্টির পানি জমিয়ে সরে যাচ্ছে মাটিগুলো। এভাবে পখচারী ও যান চলাচলকারীর ব্যাঘাত ঘটছে। কোনো সময় দুর্ঘটনার কারণও হতে পারে।  

রুপ কুমার কার্বারী জানান, সব দিকে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করা হয়েছে। কোন দিকে সুখকর নয়। ঝুঁকিপূর্ণ এবং পুরোদমে থার্ড ক্লাস কাজ করেছে। যা দীর্ঘ বছর লাষ্টিং করবে না বলে মন্তব্য করেন কার্বারী সমিতির এই সাধারণ সম্পাদক। সরেজমিনে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, মানিক চাকমা বাড়ী পাশ হতে পোস্ট অফিস কাছাকাছি পর্যন্ত নলছড়ির দিকে ওয়াল থাকলেও রাস্তাটি ২০ মিটারের মতো সোল্ডারের জায়গাটি ধসে পড়েছে। তাছাড়া গতকাল ধ্বসে পড়েছে বিরাট এক অংশ। এটা কয়েকজন মহিলা নিয়ে বস্তার ভিতরে মাটি দিয়ে ভরাট করতে দেখা গেছে। যা জিও ব্যাগের মত করে। 

ওয়ার্ড মেম্বার মো. ওমর ফারুক জানান, গতকাল বৃষ্টির কারণে সড়কটি ভেঙ্গে গেলে প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন দ্রুত নির্দেশনা দিলে গাড়ি দিয়ে মাটি আনা হয়। পরে ভরাট করা হয়। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে বিগত ৫ মে রবিবার  ২০২৪ ইং নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক দীঘলছড়ি এলাকা অনেকে জানিয়েছেন, রাস্তার পাশে শোভাবর্ধনের জন্য যে পিলারগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো শুধু ইটের উপরে বসিয়ে দিয়েছে। যা কালবৈশাখী ঝড়ে পড়ে গেছে। তখন সরকারের আমলে তাদের উপর কথা বলা কারোর সাহস নেই। নিজের মন ইচ্ছে যা ইচ্ছে তাই করে ছিল।
এই বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর আহাম্মদ সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ঠিকমত মাটি ভরাট ও সমান না করার কারণে ভেঙ্গে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের দিকে ড্রেন করা হয় নাই। ও পজিতেও ওয়ালের সঙ্গে ড্রেন করা হয় নাই। যার ফলে  ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে ও ভেঙে যাচ্ছে। এই বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউটিমং নামে থাকলেও কাজটি বাস্তবায়ন  করেছেন সাব-কন্ট্রাক্টর  মো. নুরুজ্জামান। তার সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান। আট নয় মাস আগে সড়কের কাজটি পুরোপুরি কমপ্লিট করেছি। এখন গাড়ি চলাচল করছে।  আমরা কোনো নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করি নাই। যেখানে যে রকম ধরা আছে সেভাবে করা হয়েছে। ভারী বর্ষার কারণে পাহাড় ধসে মাটি সরে যাচ্ছে। সরে যাওয়ার কারণে ভেঙ্গে পড়েছে। সড়কটি আরসিসি নয়, সিসি । আরসিসি হলে কিছুই হতো না। মাটি দিয়ে আপাতত ধরে রাখতে হবে। কাজ শেষ হয়ে গেলেও ১ বছর পর্যন্ত দায়িত্ব তাকে। এর ভিতরে যা হয় তা ঠিক করা দায়িত্ব আমাদের। 
উপজেলা প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন জানান, পাহাড়ে রাস্তাটিকে রাখা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। আস্তে আস্তে মাটি বসবে। যদি না ভাঙ্গে তাহলে পাকা ওয়ালে সমাধান করা যাবে। এটা সামান্য ভেঙ্গেছে বা ধসে পড়েছে। তাছাড়া গাইড/গার্ড ওয়াল রয়েছে। প্রয়োজনে পরে আরসিসি ওয়াল করা হবে যা ড্রেন করে পানি নিষ্কাশনের সুবিধা করতে হবে। 
উল্লেখ্য, প্রকল্পটি ২০২১ সালে ৪ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে নির্বাহী কমিটি (এগনেকে) অনুমোদন হলে, ২০২২ সাল হতে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়। যা ২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা। ৪০ কিলোমিটার রাস্তা ৩৩৮ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে বিলাইছড়ি টু মাছকাবা ছড়া বা এক নম্বর ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার। যার অর্থ বরাদ্দ ১২ কোটি টাকা, প্রতি কিলোমিটারে ৩ কোটি বাজেট। যা বিলাইছড়ি বাজার হয়ে উপজেলা, ধূপ্যাচর, দীঘলছির মাছকাবা ছড়া ১ নম্বর ব্রীজ পর্যন্ত অংশ।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *